করোনাকালে পড়াশোনায় বেশি ক্ষতি প্রান্তিক শিশুর: জরিপ

প্রকাশিতঃ মার্চ ১৬, ২০২৩ | ৭:৫১ অপরাহ্ণ
অনলাইন নিউজ ডেক্স

করোনা মহামারির কারণে বিশ্বের যেসব দেশে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় স্কুল বন্ধ ছিল, তার অন্যতম বাংলাদেশ। স্কুল বন্ধ থাকার সময় প্রতি পাঁচ শিশুর মধ্যে একজনেরও কম (১৮.৭ শতাংশ) দূরশিক্ষণ কার্যক্রমে অংশ নেয়। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ‘ন্যাশনাল সার্ভে অন চিলড্রেন’স এডুকেশন ইন বাংলাদেশ ২০২১’ শীর্ষক জরিপ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ও ইউনিসেফ যৌথভাবে জরিপটি পরিচালনা করে। জরিপে দেখা যায়, করোনার সময় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রান্তিক পর্যায়ের শিশুরা, যাদের ইন্টারনেট ও টেলিভিশন ব্যবহারের সুযোগ সীমিত এবং যাদের বাড়িতে কম্পিউটার বা স্মার্টফোনের মত সহায়ক ডিভাইসের অভাব রয়েছে। এছাড়া শহর এলাকার শিশুদের (২৮.৭ শতাংশ) চেয়ে গ্রামীণ এলাকায় কম সংখ্যক শিশু (১৫.৯ শতাংশ) দূরশিক্ষণ ক্লাসে অংশ নেয়। বড় ধরনের ভৌগোলিক বৈষম্যের বিষয়টিও জরিপে উঠে এসেছে। যেখানে দেখা গেছে, দূরশিক্ষণ কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার হার সবচেয়ে বেশি ছিল খুলনা ও ঢাকায় (যথাক্রমে ২৩.৪ শতাংশ ও ২৩.১ শতাংশ) এবং সবচেয়ে কম ছিল ময়মনসিংহে (৫.৭ শতাংশ)। সবচেয়ে কম বয়সী শিশুরা বেশি ক্ষতির শিকার হয়েছে। দূরশিক্ষণ ক্লাসে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের (নিম্ন মাধ্যমিকে ২০.৩ শতাংশ ও উচ্চ মাধ্যমিকে ২৩.৭ শতাংশ) চেয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের (১৩.১ শতাংশ) হার ছিল কম। বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, ‘শিশুদের ওপর মহামারির প্রভাব দেশজুড়ে এখনও একই রকম। শিক্ষাব্যবস্থাকে আরও বেশি মাত্রায় অভিঘাত সহনশীল করতে ডিজিটাল-বৈষম্যের অবসান ঘটাতে হবে।’ উদ্ভাবনী প্রতিকারমূলক শিক্ষাসহ পড়াশোনার ক্ষতি দূর করতে ইউনিসেফ বাংলাদেশ সরকারকে কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে। জরিপটি করোনাকালে দীর্ঘস্থায়ী বন্ধের কারণে শিশুদের স্কুলে উপস্থিতি, স্কুলের বাইরে থাকা, ঝরে পড়া ও শেখার ক্ষতিসহ শিক্ষার অনান্য ফলাফলের ওপর প্রভাব বুঝতে এবং শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য সরকারকে পদক্ষেপ নিতে সহায়তা করবে বলে মন্তব্য করেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম. এ. মান্নান। জরিপে বাল্যবিয়ে সম্পর্কিত মহামারি পরবর্তী প্রাথমিক উপাত্তও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। জরিপটি এক্ষেত্রে নিম্নমুখী প্রবণতা নির্দেশ করে, যা সতর্কতার সঙ্গে আশাবাদী হওয়ার কারণ। শিশুদের পরিস্থিতির ওপর দেশের বৃহত্তম এবং নির্ভরযোগ্য জরিপ ২০১৯ সালের বাংলাদেশ মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভে (এমআইসিএস) অনুসারে, ৫১.৪ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয়েছে তাদের বয়স ১৮ বছর হওয়ার আগে।